নতুন পোষ্টের বিজ্ঞপ্তি পেতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করুন!

যোহরের নামাজ কয় রাকাত, যোহরের নামাজের শেষ সময়

যোহরের নামাজ কয় রাকাত


যোহরের নামাজ কয় রাকাত, যোহরের নামাজের নিয়ত, যোহরের নামাজের শেষ সময় এবং  যোহরের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন। আরও জানতে পারবেন যোহরের নামাজের ফাজায়েল, যোহর নামাজের গুরুত্ব এবং যোহর নামাজ সম্পর্কিত সহীহ হাদিস সমূহ। এই পোস্টে যোহরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে যোহর নামাজ অন্যতম। ফজরের নামাজের পরে আসে যোহরের নামাজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া যেমন প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ, তেমনি নামাজের নিয়ম-কানন জানাও ফরজ। দুপুরে সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়লেই যোহর নামাজের সময় শুরু হয়, অর্থাৎ সূর্য মাথার উপর থেকে পশ্চিম আকাশের দিকে হেলে পড়লে যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়।

জোহরের নামাজ কত রাকাত

যোহরের নামাজ মোট ১২ রাকাত। প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ, তারপর ৪ রাকাত ফরজ, আবার ২ রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ এবং ২ রাকাত নফল। 

যোহর নামাজের ফাজায়েল

হযরত উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ ফরমাইছেন, যে ব্যক্তি জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও জোহরের পর চার রাকাত নিয়মিত পড়ে আল্লাহ তায়ালা তাকে দোযখের আগুনের উপর হারাম করে দেন। (নাসায়ী)

ফায়দা : যোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ এবং যোহরের পর চার রাকাতের মধ্যে দুই রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ও দুই রাকাত নফল।

আবু মুসলিম (রহঃ) বলেন, আমি হযরত আবূ উমামা (রাযিঃ)এর খেদমতে হাজির হলাম। তিনি মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। আমি আরজ করলাম যে, আমার নিকট এক ব্যক্তি আপনার পক্ষ হতে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, আপনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে এই এরশাদ শুনেছেন, যে ব্যক্তি ভালভাবে ওযূ করে অতঃপর ফরজ নামায পড়ে, আল্লাহ তায়ালা তার ঐ দিনের ঐ সমস্ত গোনাহ যা চলাফেরার দ্বারা হয়েছে, যা হাতের দ্বারা করেছে, যা কানের দ্বারা হয়েছে, যা চক্ষু দ্বারা করেছে এবং ঐ সমস্ত গোনাহ যেগুলির খেয়াল তার অন্তরে পয়দা হয়েছে সবই মাফ করে দেন? হযরত আবূ উমামা (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, আমি এই কথা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে কয়েক বার শুনেছি। (তারগীবঃ আহমদ)

হযরত উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, যে কোন মুমিন বান্দা যোহরের পর চার রাকাত পড়ে ইনশাআল্লাহ জাহান্নামের আগুন তাকে কখনও স্পর্শ করবে না। (নাসায়ী)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সায়েব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য ঢলার পর যোহরের পূর্বে চার রাকাত পড়তেন। তিনি এরশাদ করছেন, এটা এমন সময় যখন আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। এইজন্য আমি চাই যে, এই সময় আমার কোন নেক আমল আসমানের দিকে যাক। (তিরমিযী)

ফায়দাঃ যোহরের পূর্বে চার রাকাতের দ্বারা উদ্দেশ্য হল, চার রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। কোন কোন ওলামায়ে কেরামের নিকট সূর্য ঢলার পর চার রাকাত যোহরের সুন্নাতে মুআক্কাদা ব্যতীত ভিন্ন নামায।

হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই এরশাদ করতে শুনেছি যে, সূর্য ঢলার পর যোহরের পূর্বে চার রাকাত তাহাজ্জুদের চার রাকাতের সমতুল্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও এরশাদ করেছেন, এই সময় সমস্ত জিনিস আল্লাহ তায়ালার তসবীহ পাঠ করে, অতঃপর কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করেছেন, যার অর্থ এই যে, ছায়াযুক্ত জিনিসগুলো ও তাদের ছায়া (সূর্য ঢলার সময়) বিনয়ের সাথে আল্লাহ তায়ালাকে সেজদা করতঃ কখনও একদিকে কখনও অপরদিকে ঝুকে পড়ে। (তিরমিযী)

হযরত আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি একবার এরশাদ করলেন, বল দেখি, যদি কোন ব্যক্তির দরজার সামনে একটা নহর প্রবাহিত হতে থাকে, যাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তবে তার শরীরে কি কোন ময়লা বাকী থাকবে? সাহাবায়ে কেরাম (রাযিঃ) আরজ করলেন, কিছুই বাকী থাকবে না। হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের অবস্থাও এরূপ যে, আল্লাহ জাল্লা শানুহ্ উহার বদৌলতে গোনাহগুলো মিটিয়ে দেন। (তারগীবঃ বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী)

হযরত উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি যোহরের পূর্বে চার রাকাত ও যোহরের পর চার রাকাত নিয়মিত পড়ে আল্লাহ তায়ালা তাহাকে দোযখের আগুনের উপর হারাম করিয়া দেন। (নাসায়ী)

ফায়দা : যোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ এবং যোহরের পর চার রাকাতের মধ্যে দুই রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ ও দুই রাকাত নফল।

যোহরের নামাজের নিয়ম

বাকি চার ওয়াক্ত নামাজ যেভাবে পড়া হয় যোহরের নামাজও সেভাবে পড়তে হয়। যোহর নামাজের জন্য নতুন কোন নিয়ম নেই। প্রথম চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদার জন্য প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা পড়তে হবে এবং চার রাকাত ফরজ নামাজের জন্য প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা পড়তে হবে এবং ফরজের বাকি দুই রাকাতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়তে হবে। অর্থাৎ সকল ফরজ নামাজে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা পড়তে হয়, কিন্তু বাকি রাকাতগুলোতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়তে হয়। বাকি দুই রাকাত সুন্নাত ও নফল অন্যসকল দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজের মতই। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

যোহরের নামাজের নিয়ত

নামাজের ভেতরে ও বাহিরে ১৩টি ফরজ রয়েছে। উক্ত তেরো ফরজের মধ্যে একটি ফরজ হলো নিয়ত করা। নিয়ত অর্থ এরাদা করা বা ইচ্ছা করা। আরবিতে নিয়ত করা ফরজ না। আমি যোহর নামাজ পড়তেছি মনে মনে এই নিয়ত করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে। আত্মতৃপ্তির জন্য আরবিতে নিয়ত করলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আরবিতে নিয়ত করাকে ফরজ বা সুন্নত মনে করা যাবে না। আরবিতে নিয়ত করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই বাংলাতেই নিয়ত করা ভালো। বাংলাতে এভাবে যোহরের নামাজের নিয়ত করবে “আমি কেবলামুখী হয়ে যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়তেছি, আল্লাহু আকবার।” দুই রাকাত সুন্নাত হলে চার রাকাতের স্থলে দুই রাকাত বলতে হবে এবং ফরজ হলে সুন্নাতের স্থলে ফরজ বলতে হবে।

যোহরের নাজামের প্রথম চার রাকাত সুন্নাতে  মুয়াক্কাদা পড়ার নিয়ম

১)  প্রথমে ওজু করে পাক-পবিত্র হয়ে, পবিত্র স্থানে দাড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে নিয়ত করবেন যে, “আমি কেবলামুখী হয়ে যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করতেছি।”

২) তারপর দুই হাত কানের লতি বরাবর (মেয়েরা কাঁধ বরাবর হাত উঠাবে) উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে নাভির নিচে (মেয়েরা বুকের উপর) হাত বাধবে এবং বাম হাতের উপর ডান হাত রাখবে।

৩)  এবার ছানা পড়তে হবে (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুক। 

অর্থ: 'হে আল্লাহ! তুমি পাক-পবিত্র, তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই।


৪) তারপর আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।

৫)  সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করতে হবে।

৬) তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে যাওয়ার পর রুকুর তাসবি পড়বে, “সুবহানা রব্বিয়াল আযিম” তিন বার, পাঁচবার, সাতবার যতবার ইচ্ছে। তবে বেজোড় সংখ্যা পড়লে উত্তম।

৭) রুকু হতে উঠার সময় পড়বে “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” এবং সুজা হয়ে দাড়িয়ে পড়বে “রব্বানা লাকাল হামদ”।

৮) দাড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদার তাসবি পড়বে “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” তিন, পাঁচ অথবা সাতবার।

৯) এক সিজদা দেয়ার পর সোজা হয়ে বসতে হবে (দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। সোজা না হয়ে দ্বিতীয় সিজদায় গেলে ওয়াজিব বাদ পরবে এবং সু-সিজদা না দিলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে)। সোজা হয়ে বসে আবার দ্বিতীয় সিজদায় যেতে হবে। আবার তিন, পাঁচ অথবা সাতবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” পড়তে হবে।

১০) এবার আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হবে। 

১১। এবার দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর তার সাথে আরেকটি সূরা পড়তে হবে (প্রথম রাকাতের নেয় ছানা পড়ার প্রয়োজন নেই। প্রথম রাকাতেই শুধু ছানা পরতে হয়, অন্য রাকাতগুলোতে ছানা পরতে হয় না)। এখন আগের নিয়মে রুকু ও সিজদার নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং তাশাহুদ পড়তে হবে।

তাশাহুদ আরবিতে:

তাশাহুদ আরবিতে




তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ:

আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাত। আসসালামুয়ালাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্। আসসালামুয়ালাইনা আ'লা ইবাদিল্লাহিস সয়ালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহ্”।

তাশাহুদের বাংলা অর্থ

সমস্ত মৌখিক ইবাদত, সমস্ত শারীরিক ইবাদত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তা’আলার জন্য। হে নবী! আপসার উপর শান্তি ও তার বরকতসমূহ নাজিল হওক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তা’আলার নেক বান্দাদের প্রতি তার শান্তি বর্ষিত হওক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।

১২। তাশাহুদ শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে এবং সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং অন্য একটি সূরা পড়তে হবে। তারপর রুকু সিজদার নিয়মগুলো আগের মত করতে হবে এবং দুই সিজদার পর আল্লাহু আকবার বলে চতুর্থ রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।

১৩। চতুর্থ রাকাত শুরু হলো। এখন আবার সূরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য একটি সূরা পড়তে হবে এবং আগের নিয়মে রুকু করতে হবে এবং দুটি সিজদা করতে হবে।

১৪। দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে।

দুরূদ শরীফ আরবিতে:

দুরূদ শরীফ আরবিতে






দুরূদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা সল্লিয়ালা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীম, ইন্নিকা হামিদুম্মাজিদ।

দুরূদ শরীফের বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ও তাঁর পরিবারের পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করেছিলে ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনে প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাজিল কর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রসংসিত ও সম্মানিত।

দোয়া মাছুরা আরবিতে:

দোয়া মাছুরা আরবিতে

দোয়া মাছুরা বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা ইন্নি জলামতু নাফসি জুলমান কাসিরা, ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্ জুনুবা, ইল্লা আংতা, ফাগফিরলী মাগফিরাতাম, মিন ইংদিকা ওয়ার হামনী, ইন্নাকা আংতাল গাফুরুর রাহীম।

দোয়া মাছুরা বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার আর কেহ নাই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর তোমার নিজের পক্ষ হতে এবং আমাকে দয়া কর। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

১৫। তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা শেষ করে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে প্রথমে ডান কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে এবং “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে বাম কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে। এভাবে চার রাকাত সুন্নাত নামাজ শেষ হবে।

যোহরের চার রাকাত ফরজ পড়ার নিয়ম

১। চার রাকাত সুন্নাত নামাজের নেই কেবলামুখী হয়ে নিয়ত করতে হবে, “আমি কিবলামুখী হয়ে যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতেছি” আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধতে হবে।

২। এবার ছানা পড়তে হবে এবং আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।

৩। সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করতে হবে বা কোরআন শরিফের যেকোন স্থান হতে কমপক্ষে ৩ আয়াত পড়তে হবে।

৪। এবার রুকুতে যেতে হবে এবং রুকুর তাসবিহ পড়তে হবে।

৫। রুকু হতে উঠার সময়  “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” বলতে হবে এবং সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়তে হয় “রব্বানা লাকাল হামদ” (রুকু হতে সোজা হয়ে দাড়ানো ওয়াজিব এবং সোজা হয়ে দাড়িয়ে এক তাসবিহ পরিমান অপেক্ষা করতে হবে)।

৬। দাড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদার তাসবিহ “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” তিন, পাঁচ অথবা সাতবার পড়তে হবে। তারপর দ্বিতীয় সিজদায় যেতে হবে এবং তাসবিহ পড়তে হবে।

৭। এবার আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হবে। 

৮। এবার দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে প্রথমে সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং তার সাথে আরেকটি সূরা পড়বেন এবং আগের নেয় রুকু এবং দুই সেজদা করার পরে বসে তাশাহুদ পড়বেন। 

৯। তাশাহুদ শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যাবেন এবং শুধু সূরা ফাতিহা পড়বেন। সূরা ফাতিহা পড়ার পর রুকু, সেজদা করবেন (ফরজ নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য কোন সূরা পড়তে হয় না)। তারপর চতুর্থ রাকাতের জন্য আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যাবেন।

১০। এভাবে চতুর্থ রাকাতেও শুধু সূরা ফাতিহা পড়ে রুকু সেজদা করবেন এবং তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরাবেন। চার রাকাত যোহরের ফরজ নামাজ এভাবে শেষ করতে হবে।

যোহরের দুই রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়ার নিয়ম

১। নিয়ত করে আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে।

২। এবার ছানা পড়তে হবে এবং আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।

৩। সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করবেন।

৪। তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে এবং রুকু করার পর দুই সিজদা করতে হবে। 

৫। দুই সিজদা করার পর আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যাবেন।

৬। এবার দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং তার সাথে আরেকটি সূরা পড়বেন এবং আগের নেয় রুকু এবং দুই সিজদা করে বসতে হবে।

৭। বসা অবস্থায় তাশাহুদ, দুরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে। তারপর দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।

যোহরের দুই রাকাত নফল পড়ার নিয়ম

উপরে উল্লেখিত যোহরের দুই রাকাত সুন্নাতের নিয়মেই দুই রাকাত নফল পড়তে হবে।

যোহরের নামাজের সময়

যোহরের নামাজের সময় শুরু হয় দুপুরের সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়লেই। অর্থাৎ সূর্য মাথার উপর থেকে পশ্চিম আকাশের দিকে হেলে পড়লে যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়।

যোহরের নামাজের শেষ সময়

আছরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত যোহরের নামাজের সময় থাকে। শীতকালে মোটামোটি বাংলাদেশ সময় সারে তিনটা পর্যন্ত যোহরের সময় থাকে। গরমকালে আরেকটু বেশি পর্যন্ত সময় থাকে।

আরও পড়ুন: সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম

আরও পড়ুন: ফজরের নামাজ কয় রাকাত, ফজরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়?

About the Author

আমাদের এই ওয়েব সাইটে জানা ও অজানা, ভ্রমণ, রেসিপি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য পরামর্শ, বিভিন্ন প্রাকারের হিসাব নিকাশ ও আবেদন, ভূমি জরিপ এবং দৈনন্দিনের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য দিয়ে থাকি। এই সকল তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে কালেক্ট করা হয়।
কুকি সম্মতি
এই ওয়েবসাইটটি আপনাকে একটি ভালো ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দিতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে, আপনি কি কুকিজ ব্যবহারে সম্মত আছেন?
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.