আসরের নামাজ কত রাকাত, আসরের নামাজের নিয়ম, আসরের নামাজের শেষ সময় সম্পর্কে আজকের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। ইসলামের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে আসর নামাজের বিশেষ মর্জাদা রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঠাণ্ডার সময়ের নামাজ আদায় করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে অর্থাৎ আসর ও ফজর নামাজ। যোহর নামাজের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আসর নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। অর্থাৎ কোন বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হলেই আসরের ওয়াক্ত শুরু এবং সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত আসরের ওয়াক্ত থাকে। আসর নামাজ মোট আট রাকাত।
আসরের নামাজ কত রাকাত
অনেকেই জানতে চান আসরের নামায় কয় রাকাত? উত্তর হলো আসরের নামাজ মোট আট রাকাত। চার রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা এবং চার রাকাত ফরজ। প্রথম চার রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা পড়লে অনেক সওয়াব রয়েছে কিন্তু না পড়লে কোন গুনাহ নাই। বাকি থাকলো চার রাকাত ফরজ, যা প্রত্যেক মুসলীম নর-নারীকে অবশ্যই পড়তে হবে, না পড়লে মারাত্মক গুনাহ হবে। তবে মুসাফির অবস্থায় আছরের নামাজ দুই রাকাত ফরজ পড়লেই হবে। মুসাফির সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
আসরের নামাজের সময়
আসরের নামাজের সময় শুরু হয় যোহরের ওয়াক্ত শেষ হলে। কোন বস্তুর ছায়া যখন দ্বিগুণ হয় তখন থেকে আসরের সময় শুরু। অর্থাৎ সূর্যরশ্মি যখন কিছুটা লাল আভা ধারন করে তখন থেকে আসরের সময় শুরু হয় এবং সূর্য পশ্চিম আকাশে অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত আসর নামাজের ওয়াক্ত থাকে। তবে সূর্য ডোবতেছে ঐমূহুর্তে আসর নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি। যদিও ফরজ আদায় হয়ে যাবে এবং কবিরা গুনা থেকে বেঁচে যাবে কিন্তু মাকরুর গুনাহ হবে।
আসর নামাজের নিয়ত
নিয়ত অর্থ এরাদা করা বা সংকল্প করা। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোন কথা নেই। নিয়তটা এভাবে হবে “আমি কেবলামুখী হয়ে আসরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করতেছি”। তার পর আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে। আসরের চার রাকাত ফরজ পড়ার সময় সুন্নাতের স্থলে চার রাকাত ফরজ পড়তেছি আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধতে হবে। আর যদি ইমামে পেছনে জামাতে পড়া হয় তাহলে বলবে, “আমি কেবলামুখী হয়ে আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ এই ইমামের পেছনে পড়তেছি” আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে।
আসরের নামাজের নিয়ম
আসর নাজামের প্রথম চার রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা পড়ার নিয়ম
প্রথম রাকাত
➦ প্রথমে ওজু করে পাক-পবিত্র হয়ে, পবিত্র স্থানে দাড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে নিয়ত করবেন যে, আমি কেবলামুখী হয়ে আসরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করতেছি।
➦ তারপর দুই হাত কানের লতি বরাবর (মেয়েরা কাঁধ বরাবর হাত উঠাবে) উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে নাভির নিচে (মেয়েরা বুকের উপর) হাত বাধবে এবং বাম হাতের উপর ডান হাত রাখবে।
➦ এবার ছানা পড়তে হবে (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুক।
অর্থ: 'হে আল্লাহ! তুমি পাক-পবিত্র, তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই।
➦ তারপর আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।
➦ সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করতে হবে।
➦ তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে যাওয়ার পর রুকুর তাসবি পড়বে, “সুবহানা রব্বিয়াল আযিম” তিন বার, পাঁচবার, সাতবার যতবার ইচ্ছে। তবে বেজোড় সংখ্যা পড়লে উত্তম।
➦ রুকু হতে উঠার সময় পড়বে “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” এবং সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়বে “রব্বানা লাকাল হামদ”।
➦ দাড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদার তাসবি পড়বে “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” তিন, পাঁচ অথবা সাতবার।
➦ এক সিজদা দেয়ার পর সোজা হয়ে বসতে হবে (দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। সোজা না হয়ে দ্বিতীয় সিজদায় গেলে ওয়াজিব বাদ পরবে এবং সু-সিজদা না দিলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে)। সোজা হয়ে বসে আবার দ্বিতীয় সিজদায় যেতে হবে। আবার তিন, পাঁচ অথবা সাতবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” পড়তে হবে।
➦ এবার আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হবে।
দ্বিতীয় রাকাত
এবার দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর তার সাথে আরেকটি সূরা পড়তে হবে (প্রথম রাকাতের নেয় ছানা পড়ার প্রয়োজন নেই। প্রথম রাকাতেই শুধু ছানা পরতে হয়, অন্য রাকাতগুলোতে ছানা পরতে হয় না)। এখন আগের নিয়মে রুকু ও সিজদার নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং তাশাহুদ পড়তে হবে।
তাশাহুদ আরবিতে:
তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ:
আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাত। আসসালামুয়ালাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্। আসসালামুয়ালাইনা আ'লা ইবাদিল্লাহিস সয়ালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহ্”।
তাশাহুদের বাংলা অর্থ
সমস্ত মৌখিক ইবাদত, সমস্ত শারীরিক ইবাদত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তা’আলার জন্য। হে নবী! আপসার উপর শান্তি ও তার বরকতসমূহ নাজিল হওক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তা’আলার নেক বান্দাদের প্রতি তার শান্তি বর্ষিত হওক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।
➦ তাশাহুদ শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।
তৃতীয় রাকাত
দাড়িয়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং অন্য একটি সূরা পড়তে হবে। তারপর রুকু সিজদার নিয়মগুলো আগের মত করতে হবে এবং দুই সিজদার পর আল্লাহু আকবার বলে চতুর্থ রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।
চতুর্থ রাকাত
➦ চতুর্থ রাকাত শুরু হলো। এখন আবার সূরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য একটি সূরা পড়তে হবে এবং আগের নিয়মে রুকু করতে হবে এবং দুটি সিজদা করতে হবে।
➦ দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে।
দুরূদ শরীফ আরবিতে:
দুরূদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা সল্লিয়ালা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীম, ইন্নিকা হামিদুম্মাজিদ।
দুরূদ শরীফের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ও তাঁর পরিবারের পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করেছিলে ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনে প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাজিল কর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রসংসিত ও সম্মানিত।
দোয়া মাছুরা আরবিতে:
দোয়া মাছুরা বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্নি জলামতু নাফসি জুলমান কাসিরা, ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্ জুনুবা, ইল্লা আংতা, ফাগফিরলী মাগফিরাতাম, মিন ইংদিকা ওয়ার হামনী, ইন্নাকা আংতাল গাফুরুর রাহীম।
দোয়া মাছুরা বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার আর কেহ নাই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর তোমার নিজের পক্ষ হতে এবং আমাকে দয়া কর। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
➦ তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা শেষ করে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে প্রথমে ডান কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে এবং “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে বাম কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে। এভাবে চার রাকাত আসরের সুন্নাত নামাজ শেষ হবে।
আসর নাজামের চার রাকাত ফরজ পড়ার নিয়ম
প্রথম রাকাত
➦ পবিত্র স্থানে দাড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে নিয়ত করবেন যে, “আমি কেবলামুখী হয়ে আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতেছি” তারপর আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধতে হবে।
➦ এবার ছানা পড়তে হবে “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুক।”
অর্থ: 'হে আল্লাহ! তুমি পাক-পবিত্র, তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই।
➦ তারপর আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।
➦ সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করতে হবে।
➦ তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে যাওয়ার পর রুকুর তাসবি পড়বে, “সুবহানা রব্বিয়াল আযিম” তিন বার, পাঁচবার, সাতবার। তবে বেজোড় সংখ্যা পড়লে উত্তম।
➦ রুকু হতে উঠার সময় পড়বে “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” এবং সুজা হয়ে দাড়িয়ে পড়বে “রব্বানা লাকাল হামদ”।
➦ দাড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদার তাসবি পড়বে “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” তিন, পাঁচ অথবা সাতবার।
➦ এক সিজদা দেয়ার পর সোজা হয়ে বসতে হবে। সোজা হয়ে বসে আবার দ্বিতীয় সিজদায় যেতে হবে। আবার তিন, পাঁচ অথবা সাতবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” পড়তে হবে।
➦ দুটি সিজদা দেওয়ার পর আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হবে।
দ্বিতীয় রাকাত
এবার দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর তার সাথে আরেকটি সূরা পড়তে হবে (প্রথম রাকাতের নেয় ছানা পড়ার প্রয়োজন নেই। প্রথম রাকাতেই শুধু ছানা পরতে হয়, অন্য রাকাতগুলোতে ছানা পরতে হয় না)। এখন আগের নিয়মে রুকু ও সিজদার নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং তাশাহুদ পড়তে হবে।
➦ তাশাহুদ শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।
তৃতীয় রাকাত
দাড়িয়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে। সূরা ফাতিহার সাথে অন্য কোন সূরা পড়তে হবে না। কারণ ফরজ নামাজগুলোর প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য একটি সূরা পড়তে হয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য কোন সূরা পড়তে হয় না। তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর রুকু-সিজদা করতে হয়। রুকু ও সিজদা শেষ করে চতুর্থ রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।
চতুর্থ রাকাত
➦ চতুর্থ রাকাত শুরু হলো। এখন আবার সূরা ফাতিহা পড়ার পর তৃতীয় রাকাতের নিয়মে রুকু করতে হবে এবং দুটি সিজদা করতে হবে।
➦ দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে।
➦ তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা শেষ করে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে প্রথমে ডান কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে এবং “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে বাম কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে। এভাবে চার রাকাত আসরের ফরজ নামাজ শেষ হবে।
আসরের নামাজের ফাজায়েল
হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সময়মত 'নামাজ আদায় করে, উত্তমরূপে ওযূ করে, খুশু-খুযুর সাথে পড়ে, ধীর-স্থিরভাবে নামাজে দাঁড়ায়, রুকু-সেজদাও উত্তমরূপে শান্তভাবে করে, মোটকথা নামাজের সবকিছু উত্তমরূপে আদায় করে, তার নামাজ উজ্জ্বল ও নূরানী হয়ে উপরে যায় এবং নামাজীকে দোয়া দেয় যে, আল্লাহ তায়ালা তোমার এরূপ হেফাজত করুন, যেরূপ তুমি আমার হেফাজত করেছ। অপরদিকে, যে ব্যক্তি মন্দভাবে নামাজ আদায় করে, সময়ের দিকে লক্ষ্য রাখে না, ওযূও ভালরূপে করে না, রুকু-সেজদাও ঠিকমত করে না, তার নামাজ বিশ্রী ও কালো হয়ে বদ-দোয়া দিতে দিতে যায় যে, আল্লাহ তায়ালা তোমাকেও এরূপ ধ্বংস করুন, যেরূপ তুমি আমাকে ধ্বংস করেছ। অতঃপর সেই নামাজকে পুরানো কাপড়ের মত পেঁচিয়ে নামাজীর মুখের উপর মেরে দেওয়া হয় । (তারগীবঃ তাবারানী)
হযরত আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঠাণ্ডার সময়ের নামাজ আদায় করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বোখারী)
ব্যাখ্যা : দুই ঠাণ্ডার সময়ের নামাজ বলতে ফজর ও আসরের নামাজ বুঝানো হয়েছে। ফজর ঠাণ্ডার সময়ের শেষের দিকে ও আসর ঠাণ্ডার সময়ের শুরুতে আদায় করা হয়। এই দুই নামাজকে বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ হল, ফজরের নামাজ নিদ্রার আধিক্যের কারণে এবং আসরের নামাজ কাজ-কারবারে ব্যস্ততার দরুন আদায় করা কঠিন হয়ে যায়। অতএব যে ব্যক্তি এই দুই নামাজের পাবন্দী করবে সে অবশ্যই বাকি তিন নামাজেরও পাবন্দী করবে। (মেরকাত)
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন এখলাসের সাথে তকবীরে উলার সঙ্গে জামাতে নামাজ পড়ে সে দুইটি পরওয়ানা লাভ করে। এক পরওয়ানা জাহান্নাম হতে মুক্তির, দ্বিতীয় নেফাক (মুনাফেকী) হতে মুক্তির। (তিরমিযী)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা সেই ব্যক্তির উপর রহম করুন, যে আসরের পূর্বে চার রাকাত (আসরের চার রাকাত সুন্নাত) পড়ে । (আবু দাউদ)
আসরের নামাজের শেষ সময়
সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত আসরের নামাজের সময় থাকে। তবে সূর্য যখন ডোবতেছে তখন যেকোন নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি, তখন আসরের নামাজ পড়লেও কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচাগেলেও সগিরা গুনাহ হবে।
আরও পড়ুন: কসর নামাজের নিয়ম, মেয়েদের কসর নামাজ ও কসর নামাজের বিধান