আজকে আমরা দেখাবো কীভাবে গরুর মাংস রান্না করলে ক্ষতির হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং বিভিন্ন জটিলতা এড়ানো সম্ভব। নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী গরুর মাংস রান্না করলে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। একটু বিচক্ষণতার সাথে গরুর মাংস রান্না করলে এবং ক্যালরি মেপে গরুর মাংস খেলে আপনি ভরপেট খেতে পারবেন। তখন ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। যাদের কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি তারা যদি এসব নিয়ম না মেনে গরুর মাংস খান, তাহলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। চলুন দেখে নেওয়া যাক গরুর মাংস রান্নার কিছু সহজ টিপস।
গরুর মাংস রান্নার রেসিপি
রেড মিট বা গরু ও খাসির মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। তবে গরুর তুলনায় খাসির মাংসে চর্বির পরিমান একটু বেশি। যে মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাট যত বেশি, সে মাংস শরীরের জন্য তত বেশি ক্ষতিকর। সকল চর্বির মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বি বেশি ক্ষতিকর। হঠাৎ করে সে চর্বির পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতএব, আপনার কিছুটা সতর্কতার সাথে এবং মাত্রা বুঝে গরুর মাংস খাওয়া উচিত। তাদের জন্য এই কথাগুলো আরও বেশি প্রযোজ্য, যারা আগে থেকেই এসব সমস্যায় ভুগছেন ।
গরুর মাংস রান্না করতে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করবেন
➥ মাংস থেকে চর্বি আলাদা করুন এবং মাংস ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। টুকরো যত ছোট হবে, তৈলাক্ত পদার্থ মাংস থেকে তত বেশি বেরিয়ে যাবে।
➥ অল্প তেলে রান্না করতে হবে। অনেকে মনে করেন, বেশি তেল দিলেই রান্না ভালো হয়। এটি একটি ভুল ধারণা। অল্প তেলে গরুর মাংস রান্না করা ভালো। কারণ গরুর মাংসের নিজস্ব তেল থাকায়, অতিরিক্ত তেলের প্রয়োজন হয় না। আপনি সয়াবিনের পরিবর্তে সর্ষের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
➥ গরুর মাংস সবজি দিয়ে রান্না করতে পারেন। এতে প্রোটিন, তেল বা ক্যালরির পরিমাণ কমে যাবে। গরুর মাংস আলু, পেঁপে, পটল, ফুলকপি দিয়ে রান্না করতে পারেন। অনেকে গরুর মাংস রান্নাতে চুইঝাল এবং আস্ত রসুন ব্যবহার করেন। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং এটিও গরুর মাংসে যোগ করবে ভিন্ন মাত্রার স্বাদ।
➥ গরুর মাংস রান্নার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো রান্না করতে অনেক সময় লাগে। একটির একটি সহজ সমাধান রয়েছে। পেঁপে, আনারস, নাশপাতির রস, লেবু, ভিনেগার, দই মাংসকে নরম করতে সাহায্য করে। পেঁপে, আনারস, নাশপাতি বেটে এবং সমস্ত মশলা সহ মাংস ৩০ মিনিটের জন্য ম্যারিনেট করুন। আপনি লেবু, ভিনেগার এবং দইয়েও মাংস মাখিয়ে রাখতে পারেন। তবে বেশিক্ষণ ম্যারিনেট করবেন না। এতে মাংসের প্রোটিনের গঠনকে দুর্বল করে দিতে পারে।
➥ সয়াসস বা টেস্টিং সল্ট ব্যবহার না করাই ভালো। মাংস বারবার গরম করবেন না। তাতে পুষ্টি নষ্ট হয়ে ক্ষতিকারক পদার্থ এবং জটিল প্রোটিন তৈরি করে। ভুনা না করে গরুর মাংস বেক, গ্রিল, স্টেক করে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এভাবে খেলে চর্বির পরিমাণ অনেক কম থাকে।
➥ মাংস রান্না করার পূর্বে পরিমাণ মত লবণ মেখে এক ঘন্টা রেখে দিন। লবণ সহজেই মাংসের শক্ত পেশীর ফাইবার ভেঙে দেয়। এতে মাংস নরম হয়ে যায় এবং সহজে সেদ্ধ হয়।
➥ গরুর মাংসের সাথে বেশি পরিমাণে সালাদ খান। খাবারের পর কোল্ড ড্রিংকস পান না করাই ভালো। কোল্ড ড্রিংকস ও ডেজার্টের বদলে মাঠা বা টকদই খান।
গরুর মাংসের উপকারিতা
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ গরুর মাংস। এতে রয়েছে প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন, যা পেশী তৈরিতে সাহায্য করে। গরুর মাংসে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় সব অ্যামাইনু অ্যাসিড থাকে। এছাড়াও এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন বি১২ এবং বি৬, যা স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এতে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রয়েছে। এগুলো শরীরের কোষগুলোকে সুস্থ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আরও পড়ুন: হাজী বিরিয়ানি রেসিপি, এবার ঘরেই তৈরি করুন সুস্বাদু হাজী বিরিয়ানি
রেফারেন্স: প্রথম আলো