ছবি: সংগৃহীত |
শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মা শেখ মুজিবুর রহমানকে আদর করে খোকা বলে ডাকতেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের ভাই-বোন
চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়।
শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা-মাতার নাম
বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মায়ের নাম সায়েরা বেগম।
শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা জীবন
প্রাইমারি পড়ালেখা গিমাডাঙ্গায় শুরু করেন ৭ বছর বয়সে। ৯ বছর বয়সে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন ৩য় শ্রেণিতে। পরবর্তীতে তিনি ভর্তি হন স্থানীয় মিশনারি স্কুলে এবং এখান থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। বেরিবেরি রোগে ১৪ বছর বয়সে আক্রান্ত হন এবং কলকাতায় অপারেশন করান, এতে তার পড়ালেখার সাময়িক ক্ষতি হয়। তারপর তিনি ১৯৪৭ সালে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মাওয়ানা আজাদ কলেজ) থেকে বি.এ পাশ করেন এবং এখান থেকেই তার রাজনৈতিক জীবনের গোড়াপত্তন শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৪৮ সালে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
বঙ্গবন্ধুর বিবাহিত জীবন
বঙ্গবন্ধুর যখন ১৮ বছর, তখন বেগম ফজিলাতুন্নেছার সাথে বিবাবন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন চাচাতো বোন ফজিলাতুন্নেছার বয়স ছিলো ৮ বছর। তাদের পারিবারিক জীবনে দুই কন্যা ও তিন পুত্রের জন্ম হয়। দুই কন্যা শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি উপাধি
বিবিসি বাংলার এক জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে নির্বাচিত হন।
রাজনীতিতে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রবেস
১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম গঠিত হলে, শেখ মুজিবুর রহমান দলের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন এবং ১৯৫৩ সালে তিনি সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। শেখ মুজিব ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি শেখ মুজিবুর রহমান
১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ৩৫ জন বাঙালি সেনা ও সিএসপি অফিসারদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো তারা ভারতের আগরতলায় বসে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করাতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাই একে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে অভিহিত করা হয়।
শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া
১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেন।
১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর সংখ্যা গরিষ্ঠতা
আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু পছন্দ করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে বেতার টিভি ভাষণে ৬ দফা বাস্তবায়নে আওয়ামীলীগকে জয়যুক্ত করার জন্য দেশবাসীকে আহবান করেন। ৭ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০টির মধ্যে ৩০৫টি আসন পেয়ে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পরেও তাদেরকে সরকার গঠন করতে দেয়া হয়নি।
৭ই মার্চের ভাষণ
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। ঘোষণা করেন ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাইনিয়ে প্রস্তুত থাকো, মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ’
শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার
বঙ্গবন্ধুকে ২৬ মার্চ গ্রেফতার করে পাকিস্তান নিয়ে যাওয়া হয় এবং ইয়াহিয়া খান আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করেন। তখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষ হতে বাংলার স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ পাকিস্তানের লায়ালপুর সামরিক জেলে শেখ মুজিবুর রহমানের গোপন বিচার করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। তখন ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ হতে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। পাকিস্তান সরকার তখন আন্তর্জাতিক চাপে পরে ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়।
শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১০ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি করে বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয় এবং ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে (মুজিবনগর) বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তখন তাজউদ্দিন আহমদক প্রধানমন্ত্রী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং বন্ধবন্ধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়।
জুলিও কুরী পুরস্কার
বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুকে “জুলিও কুরী” পুরস্কারে ভূষিত করেন।
শেখ মুজিবের মৃত্যু
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর নিজ বাসভবনে সেনাবাহিনীর কতিপয় অফিসার তার পরিবারসহ তাকে হত্যা করে। ওই সময় তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাহিরে থাকার করানে বেঁচে যায়।
আরও পড়ুন: সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান