নতুন পোষ্টের বিজ্ঞপ্তি পেতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করুন!

সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড় এবং সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ভ্রমণ গাইড

সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়
ছবি: wikimedia


সীতাকুণ্ড (sitakunda) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি পৌর এলাকা। এটি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রশাসনিক সদরদপ্তর ও প্রধান শহর। সীতাকুণ্ডে বাংলাদেশের প্রথম ইকোপার্ক- সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, চন্দ্রনাথ পাহাড় ও চন্দ্রনাথ মন্দির সহ এখানে অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। প্রাচীন নব্যপ্রস্তর যুগে সীতাকুণ্ডে মানুষের বসবাস শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর এই এলাকাটি ইংরেজদের দখলে চলে যায়। ১৯০৮ সালে স্বদেশী আন্দোলনের সময় এটি স্বদেশীদের হাতে আসে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই এলাকাটি ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল। সীতাকুণ্ড বর্তমানে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে। 


এখানে উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড়, মহামায়া লেক, কুমিরা ঘাট, ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত ও সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক। এদের মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড়, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ও খৈয়াছড়া ঝর্ণা স্থানগুলো বেশি জনপ্রিয়। সীতাকুণ্ডের সব দর্শনীয় স্থানসমূহ ভ্রমণ করে আসার জন্য একজন ভ্রমণকারীকে কয়েকদিন সময় হাতে নিয়ে যেতে হবে। তবে ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী, নরসিংদী, চট্টগ্রাম বা তার আশপাশ থেকে সহজেই একদিনে সীতাকুণ্ডের অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারবেন। তবে খৈয়াছড়া ঝর্ণা মিরসরাই উপজেলায় পরেছে, কিন্তু সীতাকুণ্ড থেকে কাছে হওয়ায় ভ্রমণপিপাসুরা সীতাকুণ্ড ঘুরতে গেলে খৈয়াছড়া ঝর্ণায়ও ভ্রমণ করে আসেন।

যেভাবে সীতাকুণ্ড যাবেন

সারাদিন যাতে ঘুরতে পারেন সেই দিক বিবেচনায় রেখে রাতের ট্রেন বা বাসে সীতাকুণ্ডের উদ্দেশ্যে রওয়া দিতে পারেন। চট্টগ্রামগামী বাসে করে ঢাকা থেকে সরাসরি সীতাকুণ্ডে যাওয়া যায়। ফকিরাপুল, মহাখালি, সায়েদাবাদ বাস স্ট্যাণ্ড থেকে শ্যমলি, সৌদিয়া, হানিফ, ইউনিক এবং এনা সহ অনেক এসি/নন-এসি পরিবহনের যেকোন একটি বেছে নিতে পারেন। ট্রেনে ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড যেতে চাইলে আপনাকে ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে নামতে হবে। ফেনী রেলওয়ে স্টেশন থেকে অটো বা রিক্সা দিয়ে ফেনী মহিপাল বাস স্ট্যাণ্ডে যেতে হবে। সেখান থেকে লোকাল বাসে করে সীতাকুণ্ড যেতে হবে। 

সীতাকুণ্ড যাওয়ার ভ্রমণ গাইড

সবচেয়ে ভালো হবে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে চলে গেলে প্রথমেই। সেখান থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা ভ্রমণ করে বিকেলের দিকে গুলিয়াখালি গেলে। সকালের নাস্তা সেরে সিএনজিতে করে চলে যান চন্দ্রনাথ পাহাড় দেখতে। এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহি চন্দ্রনাথ মন্দির। দর্শনার্থীরা মন্দির দেখার পাশাপাশি পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন। সাথে করে পানি, স্যালাইন ও শুকনো খাবার নিয়ে নিবেন। কারণ পাহাড়ের উপরে এগুলোর জন্য আপনাকে দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় করতে হবে। সাথে করে একটি বাঁশ নিয়ে নিলে পাহাড়ে উঠতে আরোও সুবিধা হবে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট প্রায় সময় লাগতে পারে। 

চন্দ্রনাথ পাহাড় দেখা শেষ হলে এবার চলেযান আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যেল প্রতিক খৈয়াছড়া ঝর্ণায়। চন্দ্রনাথ পাহাড় থেকে বেশি দূরে নয়, ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের দূরত্বেই রয়েছে খৈয়াছড়া ঝর্ণাটি। খৈয়াছড়ার রয়েছে ১৩টি ধাপ, যা দর্শনার্থীদের হৃদয় মন ছোঁয়ে যায়। সবগুলো ধাপ দেখতে অনেক সময় লাগবে, তাই হাতে সময় থাকলে সবগুলো ধাপ ঘুরে দেখতে পারেন। অবশ্য সবগুলো ধাপ দেখার জন্য শারীরিক সামর্থ্য প্রয়োজন। দেখা শেষ হলে ফেরার পথে স্থানীয় হোটেলগুলোতে দুপুরের খাবার খেয়ে সীতাকুণ্ডে চলে আসতে পারেন। নাহয় সীতাকুণ্ড এসেও দুপুরের খাবার খেতে পারবেন। 

দুপুরের খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়ুন প্রকৃতির আরক আকর্ষণ গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত দেখতে, যা সীতাকুণ্ড থেকে ৮ মিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সীতাকুণ্ড বাস স্ট্যাণ্ড থেকে সিএনজি বা অটোতে করে সরাসরি গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। উত্তাল সাগরের গর্জন এবং সবুজ ঘাসের সৈকত এখানে মিলেমিশে একাকার। এই সৈকতের সৌন্দর্য দেখে আপনার মন ভরে যাবে। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যে আপনি বারবার প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাবেন।

থাকার ব্যবস্থা

সীতাকুণ্ড কাঁচা বাজার এলাকায় মোটামুটি ভালোমানের কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। হোটেল কম্পোট জোন, সৌদিয়া, নিউ সৌদিয়া, জলসা ও সায়মন উল্লেখযোগ্য। নাহয় আপনি চলে যেতে পারেন চট্টগ্রাম শহরে, যেখানে আপনি যেকোন মানের হোটেল পেয়ে যাবেন।

সতর্কতা:

পাহারে উঠার জন্য এবং ঝর্ণা দেখার জন্য যথেষ্ট মানসিক ও শারীরিক শক্তি প্রয়োজন। তাই ছোট বাচ্চা বা বয়স্ক কাউকে না নেয়াই ভালো। কোন কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই দাম জিজ্ঞেস করে নিন।

আরও পড়ুন: জাফলং ভ্রমণ এবং জাফলং ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

About the Author

আমাদের এই ওয়েব সাইটে জানা ও অজানা, ভ্রমণ, রেসিপি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য পরামর্শ, বিভিন্ন প্রাকারের হিসাব নিকাশ ও আবেদন, ভূমি জরিপ এবং দৈনন্দিনের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য দিয়ে থাকি। এই সকল তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে কালেক্ট করা হয়।
কুকি সম্মতি
এই ওয়েবসাইটটি আপনাকে একটি ভালো ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দিতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে, আপনি কি কুকিজ ব্যবহারে সম্মত আছেন?
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.