নতুন পোষ্টের বিজ্ঞপ্তি পেতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করুন!

কক্সবাজারের যেসব দর্শনীয় স্থান সমূহে না গেলে আপনার ভ্রমণটাই বৃথা




কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় প্রাকৃতিক ও অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। এই ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের বিশেষত্ব হল পুরো সৈকতটি বালুকাময়, কর্দমাক্ত নয়। কক্সবাজার বালুকাময় সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন অত্যাধুনিক হোটেল-মোটেল-কটেজ এবং নতুন সাজে সজ্জিত বার্মিজ মার্কেটসহ, শামুক-ঝিনুক ও নানা প্রজাতির প্রবালের সমারোহে পর্যটন মৌসুমে পর্যটকে ভরপুর থাকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত একটি মায়াবী ও অপরূপ সৌন্দর্য মন্ডিত সমুদ্র সৈকত। প্রতিদিন প্রতিক্ষণ তার রূপ বদলায় এবং পর্যটকদের বিমোহিত করে। শীত-বর্ষা-বসন্ত-গ্রীষ্মের মতো কোনো ঋতু নেই যখন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য বদলায় না।  

বাংলাদেশ পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে এখানে নির্মিত হয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হোটেল, মোটেল এবং সমুদ্র সৈকতের কাছাকাছি কক্সবাজারে রয়েছে পঁচিশটি পাঁচ তারকা হোটেল। এছাড়াও, পর্যটকদের জন্য এখানে একটি ঝিনুকের মার্কেট গড়ে তোলা হয়েছে। মায়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন ইত্যাদি দেশগুলোর বিদেশী পণ্য নিয়ে বার্মিজ মার্কেট গড়ে উঠেছে। দেশের একমাত্র ফিস অ্যাকোয়ারিয়াম রয়েছে কক্সবাজারে। এছাড়াও  ওয়াটার বাইকিং, বিচ বাইকিং, প্যারাসেলিং, কক্স কার্নিভাল সার্কাস শো, দরিয়া নগর ইকোপার্ক, কক্সবাজার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি দ্বারা নির্মিত অনেক স্থাপত্য, ফিউচার পার্ক, শিশু পার্ক এবং অনেক ফটোশুট স্পট রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে টেকনাফ জিওলজিক্যাল পার্ক। আরও রয়েছে নাইট বিচ কনসার্ট। সৈকতের লাইটিং আপনাকে রাতে সমুদ্র উপভোগ করার সুযোগ করে দিবে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এখানে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সী-অ্যাকোয়ারিয়াম। ক্যাবল কার এবং ডিজনি ল্যান্ড।

কক্সবাজার রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড



কক্সবাজার রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড

রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড সাগর ও স্বাদু পানির রঙ্গিন রাজ্যে বাংলাদেশের প্রথম সামুদ্রিক মাছের অ্যাকোয়ারিয়াম। শতাধিক ছোট-বড় অ্যাকোয়ারিয়ামে সাজানো হয়েছে দর্শনীয় নান্দনিক শিল্পকর্মটি। বৈদ্যুতিক আলোয় সুড়ঙ্গের মত সাজানো এটি এবং এতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এ যেন সমুদ্রের নিচে এক বিস্ময়কর জগত। এ যেন সাগর তলের রঙিন রাজ্য। সমুদ্রতলের প্রাণবন্ত প্রতিবিম্বের মতো বিভিন্ন প্রজাতির মাছে ঘেরা।

কক্সবাজারের ঝাউতলায় রেডিয়েন্ট ফিশ অ্যাকোয়ারিয়াম কমপ্লেক্সটি আটটি ভাগে বিভক্ত। ৮টি ভাগের মধ্যে রয়েছে থ্রি-নাইন ডি মুভি দেখার জন্য নান্দনিক স্পেস, বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি, ফটোগ্রাফির জন্য আকর্ষণীয় ডিজিটাল কালার ল্যাব, শপিং করার ব্যবস্থা, লাইভ ফিশ রেস্তোরাঁ, প্রার্থনা কক্ষ, শিশুদের খেলার জায়গা, বিয়ে বা পার্টি করার কনফারেন্স হল। ছাদে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি আয়োজন করা যাবে বার-বি কিউ। এছাড়া রয়েছে সুপরিসর পার্কিং ও লাগেজ রাখার লকার। এখানে এলে কিভাবে এক নিমিষে সময় কেটে যাবে বোঝতেই পারবেন না। পুরো নিরাপত্তা সার্কেল সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়। অ্যাকোয়ারিয়ামে গেলে দেখা যাবে ওপরে মাছ, ডানে মাছ, বাঁদিকে মাছ। এখানে আপনি কয়েক শতাধিক মাছের দেখা পাবেন। সামুদ্রিক হাঙ্গর হঠাৎ আপনার সামনে দেখা দিতে পারে। মানুষ খেকো পিরানহা খোলা দাঁত বের করে আপনার দিকে ছুটে আসতে পারে।

কক্সবাজার লাবনী বিচ

কক্সবাজার লাবনী বিচ

কক্সবাজার পুরাতন সমুদ্র-সৈকত, যা লাবনী পয়েন্ট বা পুরাতন সমুদ্র-সৈকত নামেও পরিচিত, যা কক্সবাজারের কলাতলীতে অবস্থিত। সকল সমুদ্র প্রেমি ছুটে যায় কক্সবাজার এই সি-বিচটিতে। কক্সবাজার শহরের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে লাবণী সমুদ্র সৈকতকে কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় অনেক দোকান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এছাড়াও, পর্যটকদের জন্য এখানে একটি ঝিনুকের বাজার গড়ে তোলা হয়েছে। মায়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন এবং অন্যান্য সীমান্তবর্তী দেশগুলির বাহারি সব পণ্য দিয়ে সাজানো এই মার্কেটটি।কক্সবাজার কলাতলী বিচ

কক্সবাজার কলাতলী বিচ

কক্সবাজারে পর্যটকদের আরেকটি আকর্ষণ স্থান হলো কলাতলী সমুদ্র সৈকত। এটি কক্সবাজারে একটি সি-বিচ পয়েন্ট। বিভিন্ন বয়সের মানুষ এখানে বেড়াতে, সমুদ্রে গোসল করতে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। কলাতলী সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন খাবারের রেস্তোরাঁ সহ আরো অনেক পর্যটন সুবিধা রয়েছে। কলাতলী বিচে চাঁদনী রাতে খালি পায়ে হাঁটা সব বয়সের মানুষের জন্য বিশেষ একটি রোমান্টিক মুহূর্ত। সকাল-সন্ধ্যায় উপভোগ করার জন্য রয়েছে নানা ধরনের শুটকি মাছের খাবার।

হিমছড়ি ঝর্ণা

হিমছড়ি

হিমছড়ি পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ১২ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত। পাহাড়েরর পাদদেশের এই সমুদ্র সৈকতের নাম হিমছড়ি। কক্সবাজারের তুলনায় এখানকার সমুদ্র সৈকত তুলনামূলকভাবে নির্জন ও পরিচ্ছন্ন। এর সৌন্দর্যও কোনো অংশে কম নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হল কক্সবাজার থেকে এই সমুদ্র সৈকতের রাস্তাটি হিমছড়ির চেয়েও সুন্দর এবং রোমাঞ্চকর। একপাশে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের বালিরাশি আর অন্যপাশে সবুজ পাহাড়ি সাড়ি। মাঝখানে মেরিন ড্রাইভ পিচ করা। এমন দৃশ্য দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। অনেক পর্যটক এই পথে পায়ে হেঁটে হেঁটে এর সৌন্দর্য উপভোগ করে। আপনি যখন পাহাড়ে উঠবেন, তখন আপনি নীল দিগন্তে হারিয়ে যাওয়া বিশাল সমুদ্র দেখতে পাবেন।

কক্সবাজার ইনানি বিচ

কক্সবাজার ইনানি বিচ

ইনানী বিচ বা ইনানী সমুদ্র সৈকত হিমছড়ি থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে। ইনানী সমুদ্র সৈকত প্রবাল প্রাচীর দ্বারা পরিপূর্ণ। অনেকটা সেন্ট মার্টিনের মতো। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো সৈকতে বড় ঢেউ নেই। ইনানী খুবই শান্ত সমুদ্র সৈকত। জোয়ারে সময় পাথর দেখা যায় না। ভাটার সময়, এই শিলাগুলি একটি বিশাল এলাকা জুড়ে ভাসতে থাকে। ধারালো শামুক এবং ঝিনুক প্রবাল পাথরে আঁকড়ে থাকে। তাই এখান সাবধানে পা ফেলতে হবে, না হয় যেকোন সময় বিপদ হতে পারে। প্রবাল পাথর ইনানী সমুদ্র সৈকতের প্রধান আকর্ষণ। প্রায় প্রতিটি পাথরের বিভিন্ন আকার এবং প্রকার রয়েছে। প্রকৃতি যেন পাথর বিছিয়ে তার রূপের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই রূপ দেখতে হাজার হাজার পর্যটক ছুটে যায় ইনানি বিচে।

সোনাদিয়া দ্বীপ

সোনাদিয়া দ্বীপ

সোনাদিয়া দ্বীপ কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় অবস্থিত। এই ছোট্ট সুন্দর দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কি.মি.। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে এবং  মহেশখালী দ্বীপ হতে দক্ষিণে সোনাদিয়া দ্বীপটির অবস্থান। এটি মহেশখালী দ্বীপ থেকে একটি খাল দ্বারা পৃথক হয়েছে। তিন দিকে সমুদ্র সৈকত, সাগর লতায় ঢাকা বালিয়াড়ি, কেয়া-নিশিন্দার ঝোপঝাড়, ছোট-বড় খালসহ প্যারাবন এবং বিভিন্ন ধরনের জলজ পাখি এই দ্বীপটিকে অনন্য করে তুলেছে। কক্সবাজার উপকূলে ছোট্ট একটি দ্বীপ সোনাদিয়া। এটি অতিথি পাখিদের একটি আশ্রয়কেন্দ্র। সুন্দর এ দ্বীপের পশ্চিমাংশ বালুকাময় ও ঝিনুকের জন্য বিখ্যাত। এটি কক্সবাজার থেকে প্রায় ০৭ কিলোমিটার দূরে মহেশখালী উপজেলায় অবস্থিত।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি কক্সবাজার জেলা সদরের ৪৮ কি.মি উত্তরে এবং চকরিয়া থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। মূলত এটি একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে পার্কটি ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। সাফারি পার্কটি ৯০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। প্রাকৃতিক অবকাঠামোর চেয়ে অত্যাধুনিক ও কৃত্রিম অবকাঠামো থাকায় ডুলাহাজারা সাফারি পার্ককে কেউ কেউ সাফারি পার্ক বলতে চান না। এটি আটটি ব্লকে বিভক্ত এবং পার্কটির মুক্ত পরিবেশে হাঁটাহাঁটি এবং পারিবারের সদস্যদের নিয়ে ভ্রমণের জন্য খুবই উপযোগী।

টেকনাফ

টেকনাফ

টেকনাফ বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার একটি উপজেলা। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার। নাফ নদী টেকনাফ উপজেলার পূর্ব প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, যেখান থেকে এই অঞ্চলটির নামকরণ করা হয়েছে। টেকনাফ উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, পৌরসভার কাছে থানা কমপ্লেক্সের মাথিন কুপ, বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি, টেকনাফ নেচার গেম রিজার্ভ, শিলখালী চিরহরিৎ গর্জনগাছ ইত্যাদি।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের সুদূর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত একটি প্রবালদ্বীপ। টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মিয়ানমার উপকূল থেকে ০৮ কিলোমিটার পশ্চিমে কক্সবাজার জেলার নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। প্রচুর পরিমাণে নারিকেল থাকায় স্থানীয়ভাবে এটি নারকেল জিঞ্জিরা নামেও পরিচিত। প্রতিকূল আবহাওয়ায়, দারুচিনি বহনকারী একটি আরব বণিক জাহাজ জলের নীচে একটি বিশাল পাথরের সাথে ধাক্কা লেগে বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে দারুচিনি পুরো দ্বীপে ছড়িয়ে পড়ে, পরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নাম হয়ে যায় 'দারুচিনি দ্বীপ'।

আরও পড়ুন: মেঘের রাজ্যে ভ্রমণ করতে হলে, যেতে হবে সাজেক ভ্যালিতে। পর্যটন স্থান সাজেক ভ্যালির বিস্থারিত ভ্রমণ গাইড



About the Author

আমাদের এই ওয়েব সাইটে জানা ও অজানা, ভ্রমণ, রেসিপি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য পরামর্শ, বিভিন্ন প্রাকারের হিসাব নিকাশ ও আবেদন, ভূমি জরিপ এবং দৈনন্দিনের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য দিয়ে থাকি। এই সকল তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে কালেক্ট করা হয়।
কুকি সম্মতি
এই ওয়েবসাইটটি আপনাকে একটি ভালো ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দিতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে, আপনি কি কুকিজ ব্যবহারে সম্মত আছেন?
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.