নতুন পোষ্টের বিজ্ঞপ্তি পেতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করুন!

মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত , মাগরিবের নামাজের শেষ সময়

মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত
নামাজ


মাগরিব নামাজ কয় রাকাত, মাগরিবের নামাজের সময়, মাগরিবের নামাজের নিয়ত, মাগরিবের নামাজের শেষ সময়, মাগরিবের নামাজের নিয়ম, মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরু ও শেষ ইত্যাদি বিষয়ে এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। এই আর্টিকেলে আরও জানতে পারবেন  মাগরিবের নামাজের পর কি কি আমল করতে হয় এবং মাগরিব নামাজের ফাজায়েল সমূহ। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া যেমন ফরজ, তেমনি উক্ত নামাজগুলোর নিয়ম কানুন জানাও ফরজ। আল্লাহ তা’আয়াল বলেন, “যারা জানে এবং যারা জানেনা তারা কখনো সমান?” (সূরা আয্-যুমার)। তাই নামাজের নিয়ম কানুনগুলো প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য জানা অত্যাবশ্যকীয়। আজকে আমরা মাগরিব নামাজ সম্পর্কে জানবো, কেননা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে মাগরিবের নামাজ অন্যতম। অন্য সকল নামাজ প্রথমে সুন্নাত নামাজ দিয়ে শুরু হয়, কিন্তু মাগরিবের নামাজ একমাত্র ফরজ দিয়ে শুরু হয়। তার অন্যতম কারন হলো কেয়ামতের আগে মাগরিবের সময় পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে এবং তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই মাগরিবের নামাজ ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর পর আদায় করতে হয়। এক হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমার উম্মত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা মাগরিবের নামাজ আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব না করবে।” (আবু দাউদ) । হজরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, “সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইমামতিতে মাগরিবের নামাজ আদায় করতাম।” (বুখারি)

মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত

মাগরিবের নামাজ মোট সাত রাকাত। প্রথমে ৩ রাকাত ফরজ, তারপর ২ রাকাত সুন্নাতে মোয়াক্কাদা, তারপর ২ রাকাত নফল। ৩ রাকাত ফরজ বাধ্যতামূলক পড়তে হবে এবং ২ রাকাত সুন্নাতে মোয়াক্কাদা পড়তে হবে, না পড়লে গুনাহ হবে এবং ২ রাকাত নফল পড়লে অনেক সাওয়াব পাওয়া যাবে, কিন্তু না পড়লে কোন গুনাহ হবে না। সফর অবস্থায় মাগরিব নামাজের কোন কসর হয় না, সফর অবস্থায়ও মাগরিবের নামাজ তিন রাকাত ফরজ আদায় করতে হয়।

মাগরিবের নামাজের সময়

সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। পশ্চিম আকাশে যখন সূর্য অস্ত যায় তখন থেকে ওয়াক্ত শুরু হয় এবং আকাশের লাল আভা যতক্ষণ পর্যন্ত থাকে ততক্ষণ মাগরিবের ওয়াক্ত থাকে। তবে সূর্যাস্তের সাথে সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব। গ্রীষ্মকালে মাগরিবের সময় একটু বেশি থাকে এবং শীতকালে সময় কম থাকে। বাংলাদেশর ঋতুতে মাগরিবের ওয়াক্ত শীতকালে কমপক্ষে ১ ঘন্টা থাকে এবং গ্রীষ্মকালে ১ ঘন্টার বেশি থাকে। মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর থেকে এশার ওয়াক্ত শুরু হয়।

মাগরিবের নামাজের শেষ সময়

মাগরিবের নামাজের সময় অন্যান্য নামাজের তুলনায় কম থাকে। সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশের লাল আভা কেটে গিয়ে যখন অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় তখন মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়। সহজ কথায় বলতে গেলে এশার ওয়াক্তের আগ পর্যন্ত মাগরিবের ওয়াক্ত থাকে। মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর এশার ওয়াক্ত শুরু হয়। তবে মাগরিবের নামাজ সূর্যাস্তের সাথে সাথে পড়া মুস্তাহাব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমার উম্মত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা মাগরিবের নামাজ আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব না করবে।” (আবু দাউদ) ।

মাগরিবের নামাজের নিয়ত

নিয়ত অর্থ এরাদা করা বা সংকল্প করা। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য নিয়ত বাংলাতে করাই উত্তম, কারণ আরবিতে নিয়ত করলে ভুল উচ্চারণের কারনে অর্থ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাগরিবের তিন রাকাত ফরজের নিয়ত এভাবে হবে “আমি কেবলামুখী হয়ে মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতেছি”। তার পর আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে। মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাত বা নফল পড়ার সময় ফরজের স্থলে দুই রাকাত সুন্নাত/ নফল পড়তেছি আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাধতে হবে। আর যদি ইমামের পেছনে জামাতে পড়া হয় তাহলে বলবে, “আমি কেবলামুখী হয়ে মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজ এই ইমামের পেছনে পড়তেছি” আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে।

মাগরিবের নামাজের নিয়ম

মাগরিবের  প্রথম তিন রাকাত ফরজ পড়ার নিয়ম

প্রথম রাকাত

⇨ প্রথমে ওজু করে পাক-পবিত্র হয়ে, পবিত্র স্থানে দাড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে নিয়ত করবেন যে, “আমি কেবলামুখী হয়ে মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতেছি”।

⇨ তারপর দুই হাত কানের লতি বরাবর (মেয়েরা কাঁধ বরাবর হাত উঠাবে) উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে নাভির নিচে (মেয়েরা বুকের উপর) হাত বাধবে এবং বাম হাতের উপর ডান হাত রাখবে।

⇨ এবার ছানা পড়তে হবে (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুক। 

অর্থ: 'হে আল্লাহ! তুমি পাক-পবিত্র, তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার গৌরব অতি উচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই।

⇨ তারপর আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং  সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করতে হবে বা কোরআনের যেকোন স্থান হতে তিন আয়াত সমপরিমাণ পড়তে হবে।

⇨ সূরা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে যাওয়ার পর রুকুর তাসবি পড়বে, “সুবহানা রব্বিয়াল আযিম” তিন বার, পাঁচবার, সাতবার বা যতবার ইচ্ছে। তবে বেজোড় সংখ্যা পড়লে উত্তম।

⇨ রুকু হতে উঠার সময় পড়বে “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” এবং সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়বে “রব্বানা লাকাল হামদ”। মনে রাখতে হবে রুকু হতে সোজা হয়ে দাড়ানো ওয়াজিব। সোজা হয়ে না দাড়িয়ে সিজদায় চলেগেলে সাহু-সিজদা দিতে হবে, নাহয় নামাজ হবে না। পুনরায় আবার নামাজ পড়তে হবে।

⇨ দাড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং সিজদার তাসবি পড়বে “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” তিন, পাঁচ অথবা সাতবার। তবে বেজোড় সংখ্যা পড়লে উত্তম।

⇨ এক সিজদা দেয়ার পর সোজা হয়ে বসতে হবে (দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা ওয়াজিব। সোজা না হয়ে দ্বিতীয় সিজদায় গেলে ওয়াজিব বাদ পরবে এবং সাহু-সিজদা না দিলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে)। সোজা হয়ে বসে আবার দ্বিতীয় সিজদায় যেতে হবে। আবার তিন, পাঁচ অথবা সাতবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আ-লা” পড়তে হবে।

⇨ দুই সিজদা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হবে। 


দ্বিতীয় রাকাত

এবার দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর তার সাথে আরেকটি সূরা পড়তে হবে (প্রথম রাকাতের নেয় ছানা পড়ার প্রয়োজন নেই। প্রথম রাকাতেই শুধু ছানা পরতে হয়, অন্য রাকাতগুলোতে ছানা পরতে হয় না)। এখন আগের নিয়মে রুকু ও সিজদার নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। দুই সিজদা করার পর বসতে হবে এবং বসা অবস্থায় তাশাহুদ পড়তে হবে।

তাশাহুদ আরবিতে

তাশাহুদ আরবিতে


তাশাহুদ বাংলা উচ্চারণ: আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাত। আসসালামুয়ালাইকা আয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্। আসসালামুয়ালাইনা আ'লা ইবাদিল্লাহিস সয়ালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহ্”।

তাশাহুদের বাংলা অর্থ

সমস্ত মৌখিক ইবাদত, সমস্ত শারীরিক ইবাদত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তা’আলার জন্য। হে নবী! আপসার উপর শান্তি ও তার বরকতসমূহ নাজিল হওক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তা’আলার নেক বান্দাদের প্রতি তার শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।

 তাশাহুদ শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।

তৃতীয় রাকাত

⇨ তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এবং আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে (যেকোন ফরজ নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়তে হয়, সূরা ফাতিহার সাথে অন্য কোন সূরা পড়তে হয় না) । তারপর রুকু সিজদার নিয়মগুলো আগের মত করতে হবে। 

⇨ দুই সিজদা শেষ করে বসতে হবে এবং তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে।

দুরূদ শরীফ আরবিতে

দুরূদ শরীফ আরবিতে


দুরূদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা সল্লিয়ালা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীম, ইন্নিকা হামিদুম্মাজিদ।

দুরূদ শরীফের বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ও তাঁর পরিবারের পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করেছিলে ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনে প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাজিল কর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহীম (আ.) এর প্রতি ও তাঁর পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রসংসিত ও সম্মানিত।

দোয়া মাছুরা আরবিতে

দোয়া মাছুরা আরবিতে


দোয়া মাছুরা বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা ইন্নি জলামতু নাফসি জুলমান কাসিরা, ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্ জুনুবা, ইল্লা আংতা, ফাগফিরলী মাগফিরাতাম, মিন ইংদিকা ওয়ার হামনী, ইন্নাকা আংতাল গাফুরুর রাহীম।

দোয়া মাছুরা বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার আর কেহ নাই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর তোমার নিজের পক্ষ হতে এবং আমাকে দয়া কর। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

 তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা শেষ করে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে প্রথমে ডান কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে এবং “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলে বাম কাঁধের দিকে সালাম ফিরাতে হবে। এভাবে তিন রাকাত মাগরিবের ফরজ নামাজ শেষ হবে।

মাগরিবের নামাজ জামাতের সাথে যেভাবে আদায় করতে হয়

মাগরিবের নামাজ জামাতের সাথে পড়ার সময় শুধু সূরা পড়তে হয় না, চুপ করে ইমামের সূরা শুনতে হয় এবং ইমাম যখন রুকু হতে উঠার সময় “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” বলে সোজা হয়ে দাড়াবে, তখন মুক্তাদীগণ দাড়াতে দাড়াতে বলবে “রব্বানা লাকাল হামদ”। এই দুই পরিবর্তন ছাড়া সকল নিয়ম আগের মতই থাকবে। অর্থাৎ রুকুর তাসবিহ, সিজদার তাসবিহ, তাশাহুদ, দুরূদ, দোয়া মাছুরা এবং প্রত্যেক উঠা বসার সময় “আল্লাহু আকবার” বলা ও নামাজ শেষ করার সময় “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” বলা সব কিছুই আপনাকে আদায় করতে হবে।

মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়ার নিয়ম

 প্রথমে নিয়ত করতে হবে এভাবে “আমি কেবলামুখী হয়ে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করতেছি”।  আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে।

 এবার ছানা পড়তে হবে এবং আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতনির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।

⇨ সূরা ফাতিহা শেষ করার পর যেকোন একটি সূরা পাঠ করবেন বা কোরআনের যেকোন স্থান হতে তিন আয়াত সমপরিমাণ আয়াত পাঠ করতে হবে। উক্ত নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোন সূরা নেই।

 তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে এবং রুকু করার পর দুই সিজদা করতে হবে। 

 দুই সিজদা করার পর আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে যেতে হবে।

 এবার দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং তার সাথে আরেকটি সূরা পড়া লাগবে এবং আগের নেয় রুকু ও দুই সিজদা করে বসতে হবে।

 বসা অবস্থায় তাশাহুদ, দুরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়তে হবে। তারপর দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।

মাগরিবের দুই রাকাত নফল পড়ার নিয়ম

⇨ প্রথমে নিয়ত করতে হবে এভাবে “আমি কেবলামুখী হয়ে মাগরিবের দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতেছি”।  আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধতে হবে।

⇨ তারপর উপরে উল্লেখিত মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাতের নিয়মেই দুই রাকাত নফল পড়তে হবে।

মাগরিবের নামাজের ফাজায়েল

⇨ আবু মুসলিম রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন, আমি হযরত আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর খেদমতে হাজির হলাম। তিনি মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। আমি আরজ করলাম যে, আমার নিকট এক ব্যক্তি আপনার পক্ষ হতে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, আপনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে এই এরশাদ শুনেছেন, যে ব্যক্তি ভালভাবে ওযূ করে অতঃপর ফরজ নামাজ পড়ে, আল্লাহ তায়ালা তার ঐ দিনের ঐ সমস্ত গোনাহ যা চলাফেরার দ্বারা হয়েছে, যা হাতের দ্বারা করেছে, যা কানের দ্বারা হয়েছে, যা চক্ষু দ্বারা করেছে এবং ঐ সমস্ত গোনাহ যেগুলির খেয়াল তার অন্তরে পয়দা হয়েছে সবই মাফ করে দেন? হযরত আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আল্লাহর কসম, আমি এই কথা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে কয়েক বার শুনেছি। (তারগীবঃ আহমদ)

⇨ হযরত আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি একবার এরশাদ করলেন, বল দেখি, যদি কোন ব্যক্তির দরজার সামনে একটা নহর প্রবাহিত হতে থাকে, যাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তবে তার শরীরে কি কোন ময়লা বাকী থাকবে? সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমাগণ আরজ করলেন, কিছুই বাকী থাকবে না। হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অবস্থাও এরূপ যে, আল্লাহ জাল্লা শানুহ্ উহার বদৌলতে গোনাহগুলো মিটিয়ে দেন। (তারগীবঃ বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী)

⇨ যে ব্যক্তি গুরুত্ব সহকারে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। (তিরমিজি)

মাগরিবের নামাজের পর আমল

মাগরিবের নামাজ শেষ করে কিছু নফজ আমল করার কথা হাদিসে এসেছে।

⇨ ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর নিম্নের দোয়াটি দশবার পড়লে দশটি নেকী লাভ হবে, দশটি গুনাহ ঝরবে, দশটি মর্যাদা বাড়বে, চারটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব লাভ হবে এবং শয়তান থেকে নিরাপদে থাকবে। (সহীহ তারগীব)

উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুলহা’মদু য়্যুহ্‌য়ী ওয়া ইউমিতু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই ইন ক্বদীর।

অর্থ- আল্লাহ ছাড়া কেউ সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই, তিনি জীবিত করেন, তিনিই মরণ দান করেন এবং তিনি সর্বোপরি শক্তিমান।

 হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে প্রবেশ করা মৃত্যু ছাড়া আর কোনো কিছু বাধা হবে না।’ (বুখারি, নাসাঈ, তাবারানি)

আয়তাল কুরসি বাংলা উচ্চারণ: আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম। (সূরা আল-বাক্বারা আয়াত-২৫৫)।

⇨ যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধায় তিনকুল (সূরা নাছ, ফালাক, ইখলাছ) প্রতিটি সূরা তিনবার করে পাঠকরবে, সে শয়তানের অনিষ্টতা ও জাদুটোনা থেকে বেঁচে থাকতে পারবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস ও এই দুই সুরা ( সুরা ফালাক ও সুরা নাস) পড়বে সে সব বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (তিরমিজি)

আরও পড়ুন: আসরের নামাজ কত রাকাত | আসরের নামাজের নিয়ম

About the Author

আমাদের এই ওয়েব সাইটে জানা ও অজানা, ভ্রমণ, রেসিপি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য পরামর্শ, বিভিন্ন প্রাকারের হিসাব নিকাশ ও আবেদন, ভূমি জরিপ এবং দৈনন্দিনের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য দিয়ে থাকি। এই সকল তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে কালেক্ট করা হয়।
কুকি সম্মতি
এই ওয়েবসাইটটি আপনাকে একটি ভালো ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দিতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে, আপনি কি কুকিজ ব্যবহারে সম্মত আছেন?
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.